যুক্তরাষ্ট্র অফিস
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সম্প্রতি বাবা মায়ের সামনেই ওজনপার্ক এলাকায় ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিওকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কীভাবে পুলিশের গুলিতে উইন রোজারিও নিহত হয়েছে তার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস।
গত শুক্রবার পুলিশের বডি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশ করা হয়। উইন রোজারিওর মৃত্যুর এ লোমহর্ষক ভিডিও দেখে উদ্বেগ প্রকাশ ও হতবাক হয়েছে দেশটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
নিউ ইয়র্ক সিটির অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছে, পুলিশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনসাধারণের মনে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি আর আস্থা জোরদারের জন্যই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ৯১১-এ খবর পাওয়ার পর পুলিশ অফিসার রোজারিওর ছোট ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তাদের বাসায় প্রবেশ করে। এসময় রোজারিও রান্না ঘরের ড্রয়ার থেকে কাচি বের করে পুলিশের দিকে নিক্ষেপের চেষ্টা করলে তার মা কাঁচি ছাড়িয়ে নেয়। পরবর্তীতে রোজারিও আবার পুলিশের দিকে তেড়ে আসলে পুলিশ তাকে নিবৃত করতে রাবার বুলেট ছুড়ে মারে। এসময় রোজারিও পুলিশকে চলে যেতে চিৎকার করতে থাকে এবং পুলিশও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় তার মা ও ভাই রোজারিওকে গুলি না করতে পুলিশের প্রতি বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পুলিশ রোজারিওকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি করে। গুলি চালানোর সময় অপর এক পুলিশ কর্মকর্তাকেও বাধা দিতে দেখা গেছে। কিন্তু তিনি তার কথা না শুনে আবারও গুলি করেন। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই রোজারিওকে হত্যার ঘটনা ঘটে।
এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নিউইয়র্ক পুলিশ বিবৃতিতে বলেছে যে, রোজারিও নিহতের ঘটনায় জড়িত দুই পুলিশ কর্মকর্তার শিল্ড ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রত্যাহার পূর্বক তাদের পরিবর্তিত অ্যাসাইনমেন্ট-এ রাখা হয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে।
ভিডিওটি প্রকাশের পর রোজারিওর মা-বাবা প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমাদের নির্দোষ ছেলেকে পুলিশ নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ঘটনার সময় দায়িত্বপালনকারী অফিসারদের বরখাস্ত এবং রোজারিওকে হত্যার অভিযোগে ওই দুই অফিসারের বিচার দাবি করেছেন তারা বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নিউইয়র্কের ওজনপার্কের ১০৩ স্ট্রিট ও ১০১ এভিনিউতে নিজ বাসায় মা ও ছোট ভাইয়ের সামনেই পুলিশের গুলিতে নিহত হন উইন রোজারিও। ওই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশিরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করে আসছেন।