ডেস্ক রিপোর্ট
ফ্রান্সের উপকূল থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছাতে গিয়ে এক শিশুসহ পাঁচ অভিবাসীর মৃত্যুর হয়েছে। এ ঘটনায় অনিয়মিত অভিবাসনে সহযোগিতার অভিযোগে সন্দেহভাজন তিন জনকে আটক করেছে ব্রিটিশ পুলিশ৷
মঙ্গলবার ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকা থেকে পড়ে মারা যান পাঁচ অভিবাসী৷ সেদিন রাতেই এই তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
ব্রিটিশ পুলিশ বুধবার গণমাধ্যমকে জানায়, একটি ছোটো নৌকায় গাদাগাদি করে তোলা হয় অন্তত ১১২ জন যাত্রীকে৷ এরপর বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম শিপিং লেন ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে রওনা হয় নৌকাটি৷ কিন্তু কিছু দূর যেতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন নৌকায় থাকা অভিবাসীরা৷ অনেকেই পানিতে পড়ে যান৷
উদ্ধারকারীরা সমুদ্র থেকে অন্তত ৫০ জনকে উদ্ধার করে৷ তাদের মধ্যে চার জনকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে৷ কিন্তু নৌকায় থাকা অন্য যাত্রীদের চেষ্টা করে থামানো যায়নি৷ তারা যেকোনো মূল্যে ব্রিটেন পৌঁছাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ৷
ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) জানিয়েছে, অনিয়মিত অভিবাসন ও যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত পথে প্রবেশে সহায়তার সন্দেহে মঙ্গলবার রাতেই ২২ এবং ১৯ বছর বয়সি দুই জন সুদানি নাগরিক এবং ২২ বছর বয়সি একজন সাউথ সুদানের নাগরিককে আটক করা হয়েছে৷ তাদের তিন জনই পুরুষ৷
এনসিএ-এর তদন্ত শাখার উপ পরিচালক ক্রেইগ টার্নার বলেন, ‘‘এই মর্মান্তিক ঘটনাটি আবারও মনে করিয়ে দেয় এমন যাত্রা জীবনের জন্য কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং একইসঙ্গে এসব পারাপারে জড়িত অপরাধী চক্রকে ভেঙে ফেলা কেন জরুরি৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘এই ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনতে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব৷’’
এনসিএ আরো জানিয়েছে, ব্রিটিশ পুলিশের পাশাপাশি ফ্রান্সে উপকূলের ঘটনা তদন্তে কাজ করছে ফরাসি পুলিশ৷
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরও ওই নৌকাটি নিয়ে যে ৫৫ জন অভিবাসী ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছেছে তাদেরকেও শনাক্ত করা হয়েছে৷
চলতি বছর ছয় হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনের উপকূলে পৌঁছেছেন৷
ইংলিশ উপকূলে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ দেশে না রেখে রুয়ান্ডায় পাঠাতে সরকারের নেয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি বিল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট পাস হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক মনে করেন, এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা হলে আশ্রয়প্রার্থীরা যুক্তরাজ্যের প্রতি আগ্রহ হারাবে৷