আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জিবুতি উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ২১ জন প্রাণ হারিয়েছেন৷ জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার জিবুতিতে মিশন প্রধান তানজা প্যাসিফিকো নাইরোবিতে এএফপিকে বলেছেন, ২১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, ২৩ জন এখনও নিখোঁজ। ওই নৌকায় থাকা আরো ৩৩ জন জীবিত রয়েছেন৷ এর আগে ৮ এপ্রিল মূলত ইথিওপিয়ান অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আরেকটি জাহাজ একই এলাকায় ডুবে গেলে ৩৮ জন প্রাণ হারান৷
আইওএম যা জানিয়েছে
আইওএম এক্স প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছিল, জিবুতিতে তারা ‘‘স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে৷’’
সংস্থার এক মুখপাত্র ইভন এনডেগে এএফপিকে বলেন, মৃত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে এক নাবালক এবং একটি শিশুও রয়েছে৷ তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি৷
জিবুতিতে ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূত বেরহানু সেগায়ে এক্স প্ল্যাটফর্মে লেখেন, জাহাজটি ইয়েমেন থেকে ইথিওপিয়ান অভিবাসীদের নিয়ে যাচ্ছিল৷ সোমবার রাতে উত্তর-পূর্ব জিবুতির গোডোরিয়া থেকেই এই বিপর্যয়ের সূত্রপাত হয়৷ এতে একজন নারীসহ ৩৩ জন বেঁচে রয়েছেন৷
এ ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি আবারো বলছি অবৈধ মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যারা আমাদের নাগরিকদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে৷’’
উপসাগরীয় দেশগুলোর জনপ্রিয় রুট জিবুতি
অভিবাসীরা সাধারণত লোহিত সাগর পেরিয়ে ‘পূর্বদিকের রুট’ হয়ে রওনা দেন৷ নিজেদের পরিবারকে দারিদ্র্যের হাত থেকে বাঁচাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন পেরিয়ে সৌদি আরবে পৌঁছাতে চান তারা৷
আইওএম ফেব্রুয়ারি মাসে জানিয়েছিল, এই পথ বিপজ্জনক কারণ, অভিবাসীরা এখানে মানবপাচারকারীদের মূল ‘টার্গেট’৷ অপহরণ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার এবং বিশেষ করে ইয়েমেনে যুদ্ধরত গোষ্ঠীতে জোরপূর্বক নিয়োগের মুখেও পড়তে হয় অভিবাসীপ্রত্যাশীদের৷
গত বছরের নভেম্বরে, ইয়েমেনের উপকূলে একটি নৌকাডুবির পর ৬৪ জন অভিবাসী নিখোঁজ হন৷ সংস্থা জানায়, সমুদ্রে তারা তলিয়ে গিয়েছেন৷
আইওএম বলছে, প্রতি বছর হাজার হাজার অভিবাসী হর্ন অফ আফ্রিকার (ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া) দেশগুলো থেকে লোহিত সাগরের পথ ধরে উপসাগরীয় দেশগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন৷ জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসী রুটগুলোর একটি’ বলে মনে করে৷ আইওএম-এর ২০২৩ সালের তথ্য বলছে, এই পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়ছে৷
সংস্থার মতে, গত বছর জিবুতি বা সোমালিয়া থেকে ইয়েমেনে আসা প্রায় এক লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে ৭৯ শতাংশ ইথিওপিয়ান, বাকিরা সোমালিয়ার নাগরিক৷
আইওএম ফেব্রুয়ারিতে জানায়, সংস্থার নিখোঁজ অভিবাসী প্রকল্প অনুসারে গত বছর (২০২৩ সালে) জিবুতি থেকে ইয়েমেনে যাওয়ার পথে এডেন উপসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৬৯৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন৷